Date:

হে মানুষ আল্লাহকে ভয় কর!

মানুষের প্রতি আল্লাহর সর্বশেষ আহবান ‘তোমরা ভয় কর সেই দিনকে, যেদিন তোমরা সকলে ফিরে যাবে আল্লাহর কাছে। অতঃপর প্রত্যেকে পাবে তার স্ব স্ব কর্মফল। আর তারা কেউ সেদিন অত্যাচারিত হবে না (বাক্বারাহ ২৮১)। বস্ত্ততঃ এটাই ছিল কুরআনের সর্বশেষ আয়াত, যা রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর ৭ বা ২১দিন পূর্বে নাযিল হয়েছিল। দেশে ক্রমেই রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দলাদলির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের রাজনীতির এটাই হ’ল তিক্ত পরিণতি। এখানে বিবেক ভোঁতা, হিংসা প্রবল। এখানে মিথ্যা সুন্দর, সত্য অসুন্দর। এখানে বিচার অচল, উচ্ছ্বাস মুখ্য। অথচ সত্য চিরদিন সত্য। তা কখনোই সংখ্যার মুখাপেক্ষী নয়। দেড় হাযার বছর পূর্বেই আল্লাহ আমাদেরকে সেকথা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘তোমার প্রভুর বাণী সত্য ও ন্যায় দ্বারা পূর্ণ। তাঁর বাণীর পরিবর্তনকারী কেউ নেই। তিনি সবকিছু শোনেন ও জানেন’। ‘অতএব যদি তুমি জনপদের অধিকাংশ লোকের কথা মেনে চলো, তাহ’লে ওরা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে। কারণ ওরা কেবল ধারণার অনুসরণ করে এবং ওরা কেবল অনুমানভিত্তিক কথা বলে’। ‘তোমার প্রভু ভালভাবেই জানেন কে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালভাবেই জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত’(আন‘আম ১১৫-১১৭)। অতএব রাস্তা যদি সবকিছুর নিয়ামক হয়, তাহ’লে ইলেকশন, সংসদ, আদালত এসব কি দরকার? ফিরে চলুন সেই আদিম যুগে? মাইট ইজ রাইট-এর যুগে?

বিশ্বব্যাপী হিংসা-হানাহানির মূলে রয়েছে শয়তানের তাবেদারী। আল্লাহ বলেন, স্থলে ও সাগরে সর্বত্র বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে, যা মানুষের কৃতকর্মের ফল। এটা এজন্য যে, আল্লাহ চান তাদের কৃতকর্মের কিছু স্বাদ আস্বাদন করাতে। যাতে তারা ফিরে আসে’ (রূম ৪১)। এর মন্দ পরিণতি বাস্তবে জানার জন্য তিনি মানুষকে আহবান করে বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছিল। তাদের অধিকাংশ মুশরিক ছিল’ (রূম ৪২)। তারা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও তাঁর প্রতি আনুগত্যকে অস্বীকার করে নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও নফসের প্রতি আনুগত্যকে প্রতিষ্ঠা করেছিল। ফলে নিজেরা নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনেছিল। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সীমান্ত অরক্ষিত। সর্বত্র লুটপাট ও দুর্নীতি স্পষ্ট। নদীমাতৃক বাংলাদেশ আজ মরুভূমি। মানুষের জান-মাল ও ইযযত এখন সবচেয়ে সস্তা সামগ্রী। অথচ সবকিছু থেকে মুখ ফিরিয়ে হঠাৎ কার ইশারায় আমরা ফিরে গেলাম এমন একটি ইস্যুতে যাতে জাতির কোন মঙ্গল নেই। বরং আছে কেবলই অকল্যাণ আর অকল্যাণ। যার নিদর্শন ইতিমধ্যে পরিস্ফূট। ষড়যন্ত্রকারীরা দূরে বসে মুখ টিপে হাসছে। অতএব হে জাতি! সাবধান হও! ফিরে এসো এমন অবস্থায় পেঁŠছনোর আগে, যেখানে পৌছে গেলে আর ফিরতে পারবে না। তখন ধ্বংস অনিবার্য হয়ে পড়বে। আর সেটাই সুঁড়সুড়ি দাতাদের একান্ত কাম্য ও বড়ই আরাধ্য। বিশ্ব ইতিহাসে সমূলে ধ্বংসপ্রাপ্ত ৬টি জাতির কথা আল্লাহ কুরআনে বর্ণনা করেছেন। তারা হ’ল কওমে নূহ, ‘আদ, ছামূদ, লূত, মাদিয়ান ও কওমে ফেরাঊন। এইসব জাতির নেতারা নবীগণের অবাধ্য হয়েছিল এবং তাদের দোষেই পূরা জাতি ধ্বংস হয়েছিল। তাই নেতাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সর্বাধিক। যাকে বিমানের পাইলট ও বাসের ড্রাইভারের সাথে তুলনা করা যায়। অতএব নেতাদের কর্তব্য হ’ল জনগণের আক্বীদা ও বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। কিন্তু ইংরেজ শাসকরা যতটুকু করত, এখন সেটুকুও দেখা যাচ্ছে না। দিল্লীতে মাত্র একজন মুসলিম নাগরিক, যিনি অমিত সাহস নিয়ে গরু কুরবানী করেছিলেন। তার প্রতি সম্মান জানিয়ে সংখ্যাগরিষ্টের প্রবল চাপকে উপেক্ষা করে ইংরেজ সরকার সেদিন ভারতবর্ষে গরু কুরবানী নিষিদ্ধ করেনি। অথচ এখন এই মুসলিম দেশে প্রকাশ্যে ইসলাম ও ইসলামের নবীর বিরুদ্ধে ও কুরআনের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করা হচ্ছে। আর নেতারা তাতে সমর্থন দিচ্ছেন। আল্লাহ বলেন, তুমি তোমার চেহারাকে আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি একনিষ্ঠ কর। আল্লাহর পক্ষ হ’তে সেই দিন আসার পূর্বে, যা অনিবার্য এবং যেদিন সবাই বিভক্ত হয়ে পড়বে’। ‘অতএব যে ব্যক্তি অবিশ্বাস করবে, তার অবিশ্বাসের শাস্তি তার উপরে বর্তাবে। আর যারা (বিশ্বাসী হবে ও সে অনুযায়ী) সৎকর্ম সম্পাদন করবে, তারা নিজেদের জন্য (জান্নাতে) সুখশয্যা রচনা করবে’(রূম ৪৩-৪৪)। সমাজে শান্তি ও স্থিতি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব সবার। তবে প্রধান দায়িত্ব হ’ল সরকারের। জনগণের পক্ষে সরকারই এজন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। সরকার, প্রশাসন ও আদালত তাই কোন দলের নয়, বরং জনগণের। জনগণই তাদের বেতন-ভাতা প্রদান করে থাকে। অতএব তাদেরকে অবশ্যই দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে থাকতে হবে ও সকলের প্রতি নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ যেন তোমাদেরকে সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা ন্যায়বিচার কর, যা আল্লাহভীরুতার সর্বাধিক নিকটবর্তী। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে ওয়াকিফহাল’ (মায়েদাহ ৮)।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যখন মানুষ কোন অন্যায় হ’তে দেখে, অথচ  তা প্রতিরোধ করে না, আল্লাহ সত্বর তাদের উপর ব্যাপক গযব নামিয়ে দিবেন (তিরমিযী)। নিঃসন্দেহে পাপ-পুণ্য সেটাই যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নির্ধারণ করেছেন। মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছা কখনো ন্যায়-অন্যায় ও পাপ-পুণ্যের মানদন্ড নয়। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি বলে দাও যে, সত্য কেবল তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হতে আসে। অতঃপর যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করুক। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে  তা অবিশ্বাস করুক। আমরা যালেমদের জন্য জাহান্নাম প্রস্ত্তত করে রেখেছি’(কাহফ ২৯)।  একদল ধর্মনেতা ও সমাজনেতা নিজেদের কথা ও কাজকে সর্বোত্তম ও চূড়ান্ত বলে মনে করেন। অথচ আল্লাহ বলেন, ‘তুমি বলে দাও, আমি কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে খবর দিব না’? ‘যাদের পার্থিব জীবনের সকল কর্ম বরবাদ হয়েছে। অথচ তারা ভাবে যে, তারা সুন্দর কর্মসমূহ সম্পাদন করেছে’। ‘এরা হ’ল তারাই যারা তাদের প্রতিপালকের আয়াতসমূহকে ও তাঁর সাক্ষাৎকে অবিশ্বাস করেছে। ফলে তাদের সকল কর্ম বিনষ্ট হয়েছে। অতএব ক্বিয়ামতের দিন আমরা তাদের আমলসমূহ ওযনের জন্য দাঁড়িপাল্লা খাড়া করব না’ (কাহফ ১০৩-০৫)। অর্থাৎ তাদের প্রতি কোনরূপ দৃকপাত করা হবে না।উচ্ছ্বাস কোন বাধা মানে না। তা সাধারণতঃ চরমপন্থী হয়ে থাকে। যা একদিন হযরত ওছমান ও হযরত আলী (রাঃ)-কে হত্যা করেছিল। সেদিন ইহুদী চক্রান্ত তাদের পিছনে কাজ করেছিল। সম্প্রতি ‘আরব বসন্ত’ নামে যে ঢেউ তোলা হয়েছিল। এখন যা সিরিয়ায় চলছে; তা সেসব দেশের গণমানুষের কোন কাজে আসেনি। বরং যাদের মদদে এটা হয়েছিল, তাদেরই লুণ্ঠনের পথ সুগম হয়েছে। এই উচ্ছ্বাস একদিন শেখ মুজিবের পাহাড়সম জনপ্রিয়তাকে নিমেষে ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছিল এবং তাঁর অনুসারীদের মধ্য থেকেই দেশে প্রথম  বিরোধীদল খাড়া হয়েছিল। কারা সেই উচ্ছ্বাসের পিছনে সেদিন ইন্ধন যুগিয়েছিল আশা করি মুজিবকন্যার তা অজানা নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা তরুণদের ও বোকাদের নেতৃত্ব থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও (আহমাদ, তিরমিযী)। তিনি বলেন, আল্লাহ যাকে জনগণের নেতৃত্ব দান করেন, অথচ সে তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল এবং ঐ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করল, আল্লাহ তার উপর জান্নাতকে হারাম করে দেন <em>(বুখারী, মুসলিম)। তিনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নীচে সাত শ্রেণীর মানুষ ছায়া পাবে। তাদের মধ্যে প্রথম হ’ল ন্যায়পরায়ণ শাসক ও বিচারক। দ্বিতীয় হ’ল ঐ যুবক, যে আল্লাহর দাসত্বে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে... (বুখারী, মুসলিম)। পরিশেষে বলব, আল্লাহ ও তাঁর বিধানই কেবল সত্য ও সুন্দর। সেই সত্যকে প্রতিষ্ঠা দানের জন্য সত্যসেবীদের এগিয়ে আসা কর্তব্য। রাষ্ট্র ও সমাজনেতাগণ সেই সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে দেশে আল্লাহর গযব অনিবার্য হয়ে পড়বে। অতএব হে মানুষ আল্লাহকে ভয় কর!
Share:

পাটের ব্যবসায় ভাঁটা ।

দোতলা প্রেস কারখানা ভবনের দুই পাশে বিশাল আকারের ৩৮টি গুদাম। 

গুদামগুলোর আয়তন সাড়ে পাঁচ লাখ বর্গফুট। সেখানে যাচাই-বাছাই শেষে শ্রমিকেরা মাথায় করে পাট নিয়ে যাচ্ছেন কারখানার ওপরের তলায়। তারপর সেই পাট ওজন করে দৈতাকার প্রেস মেশিনের একটি অংশে রেখে মোটা দড়ি দিয়ে প্যাঁচানো হয়। তারপর মেশিনে চাপ প্রয়োগ করে বেল আকার দেওয়া হয়। প্রতি বেলে ১৮২ কেজি পাট থাকে।
মেশিন থেকে প্রতি বেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিচতলায় চলে যায়। তারপর নির্দিষ্ট ট্রলিতে করে সেগুলো আবার রপ্তানির জন্য গুদামে নিয়ে রাখা হয়। ট্রলি চালানোর জন্য পুরো কারখানা চত্বরে রয়েছে রেললাইন। আবার বিভিন্ন এলাকা থেকে নদীপথে কাঁচা পাট আনার জন্য কারখানার ভেতর পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদীর একটি চ্যানেল আছে। পাটবাহী ট্রলার কিংবা বড় নৌকা চ্যানেল দিয়ে কারখানায় আসে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকার কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গল (বিডি) লিমিটেডের জুট বেলিং কারখানার ভেতরের চিত্র এটি। ১ জুলাই কারখানা চত্বর ঘুরে দেখা যায়, অল্প কয়েকটি গুদামে তিন-চারজন করে শ্রমিক পাট যাচাই-বাছাইয়ে কাজ করছেন। কিছু গুদাম ফাঁকা। তবে প্রেস হাউস বেশ কর্মচঞ্চল। দুটি প্রেস মেশিনে প্রায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। গুদাম থেকে কারখানায় পাট আনতে ব্যস্ত আরও অর্ধশতাধিক শ্রমিক। সবারই পুরো শরীর পাটের সোনালি আঁশে মাখামাখি।
৩০ বছর ধরে কারখানার প্রেস মেশিন চালানোর কাজ করেন শ্রমিক মো. ইয়াসিন। তিনি বলেন, বর্তমানে কাজ কম থাকায় কারখানাটি ছয় ঘণ্টা চলছে। তবে পাটের ভরা মৌসুম আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাস কারখানায় আট থেকে দশ ঘণ্টা জুট বেলিংয়ের কাজ হবে। 
সোনালী আঁশ চাষে প্রকৃত দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। 

কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট আগে কাঁচা পাট রপ্তানি করলেও বর্তমানে করে না। তাদের জুট বেলিং কারখানা চত্বরের ৩৮ গুদাম ভাড়া নিয়েছে ১২টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। তারাই কুমুদিনীর প্রেস মেশিন ব্যবহার করে পাটের বেল তৈরি করে। প্রতি বেলের জন্য গুনতে হয় ২৩৫ টাকা।
জানতে চাইলে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পুরোনো কর্মকর্তা জগন্নাথ পোদ্দার বলেন, কারখানায় আগে প্রতিদিন ৮০-৮৫ হাজার মণ পাট আসত। দিন-রাত মিলিয়ে ১৬ ঘণ্টা কাজ হতো। এখন সকালে চালু করলে দুপুরে বন্ধ করে দিতে হয়। এই হচ্ছে অবস্থা। তিনি বলেন, ‘আমাদের কারখানার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩ লাখ বেল। কিন্তু ১ লাখ ২৫ থেকে ৩০ হাজার বেলের বেশি বর্তমানে হচ্ছে না। ব্যবসা মন্দা, তাই চারটি প্রেস মেশিনের মধ্যে দুটি চালানো হচ্ছে। কিছু গুদাম তুলা ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
প্রাচ্যের ড্যান্ডিখ্যাত নারায়ণগঞ্জের কাঁচা পাটের ব্যবসায় বহুদিন ধরেই মন্দা চলছে। বহির্বিশ্বে চাহিদা কমে যাওয়ায় কাঁচা পাট রপ্তানি কমে গেছে। নারায়ণগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, কাঁচা পাট রপ্তানি কমে যাওয়ায় রপ্তানিকারকদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সরকারি সাতটি প্রেস হাউস বন্ধ। বেসরকারি পর্যায়ে সাতটি প্রেস হাউস চালু থাকলেও প্রায় সবগুলোই চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১৬ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের কাঁচা পাট রপ্তানি হয়। বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ কাঁচা পাট রপ্তানি কমে ১৫ কোটি ৫৬ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে গত অর্থবছরে রপ্তানি কমেছে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। বাংলাদেশের কাঁচা পাট রপ্তানির গন্তব্য পাকিস্তান, ভারত, চীন, নেপাল, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, হংকং, তিউনিসিয়া, আইভরি কোস্ট, এল সালভেদর ও ফিলিপাইন।
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা এলাকায় কুমুদিনীর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের আরেকটি জুট বেলিং কারখানা ছাড়াও পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ কারখানা আছে। ২ জুলাই কারখানাটিতে ঢুকতেই প্রেস হাউস চোখে পড়ল। পাশেই সারি সারি গুদাম। নদীর পাড়ে পাটবাহী ট্রলার ভেড়ার জন্য আছে নিজস্ব জেটি।
কারখানা ঘুরে দেখা গেল, শ্রমিকেরা বেল করা পাট ট্রলিতে করে নিয়ে গুদামে রাখছেন। গুদামে পাটের গ্রেডিংয়ের কাজ করছেন বেশ কিছু শ্রমিক। কারখানাটিতে চার শ শ্রমিক কাজ করেন। বর্তমানে পাটের ভরা মৌসুম না হওয়ায় কয়েকটি গুদাম গম রাখার জন্য ভাড়া দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ নিজেরাই কাঁচা পাট বেল আকারে রপ্তানি করে। নারায়ণগঞ্জের পাশাপাশি খুলনার দৌলতপুর, সৈয়দপুর, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাটের ব্যবসা আছে প্রতিষ্ঠানটির। সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক হিসেবে কয়েক দফা জাতীয় রপ্তানি ট্রফি পুরস্কার পেয়েছে পপুলার।
প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (রপ্তানি) স্বপন কুমার রায় প্রথম আলোকে বলেন, হঠাৎ করে পাটের দাম মণপ্রতি ৩০০-৪০০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় খুব মুশকিলে আছি। কারণ এই বাড়তি দাম তো ক্রেতারা দেবেন না। তিনি বলেন, ‘কাঁচা পাটের ব্যবসায় মন্দা চলছে। গত অর্থবছর ২ লাখ ৮৮ হাজার বেল কাঁচা পাট রপ্তানি করেছি আমরা। কিন্তু কয়েক বছর আগেও আমাদের রপ্তানি ছিল ৪-৫ লাখ বেল।’
কাঁচা পাট রপ্তানিকারকদের সমিতি বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএ) রেজিস্ট্রার কার্যালয় আছে নারায়ণগঞ্জে। সেখানে গিয়ে সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘বহির্বিশ্বে পাটের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে ব্যবসা পড়ে গেছে। আবার সরকারের নীতির কারণেও আমরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। যেমন ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ মাস সব ধরনের কাঁচা পাট রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল মন্ত্রণালয়। তখন বিদেশি অনেক ক্রেতা আমরা হারিয়েছি। তাঁরা অন্য দেশ থেকে পাট কেনায় ঝুঁকে পড়েন। চলতি বছর আবার তিন ধরনের কাঁচা পাট রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’
দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা যেসব পাট রপ্তানি করি, তা খুবই নিম্নমানের। এসব পাট দিয়ে চটের বস্তা, সুতা কিছুই তৈরি করা যায় না। তাই মন্ত্রণালয়ের উচিত রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে বরং নতুন বাজার খোঁজা। তাহলে রপ্তানি আয় বাড়বে। ব্যবসায়ীরাও বাঁচবেন।’ 
সুত্রঃ প্রথম আলো । 
Share:

ভারত থাকছেন না প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ;

গুঞ্জন অবশেষে সত্যি হল।বেশ কিছুদিন ধরে এমনই কথা বাতাসে ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছিল।হুম  ' ভারত ' ছবিতে থাকছেন না সাবেক বিশ্বসুন্দরী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া । আরেহ কি ভাবছেন ! অবাক হলেন! অবাক হবার কিছু নাই।কারণ দেশ ছাড়ছেন  না দেশী এই গার্ল।তবে নির্মাতা আলী আব্বাস জাফরের "ভারত" ছবি ছারছেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া 



তবে কেন এই ছবিতে থাকছেন না প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, তা নিয়ে নানাজনের নানা মত রয়েছে।তবে পরিচালক আলী আব্বাস জাফর খুব ইতিবাচকভাবেই খবরটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে এই নির্মাতা জানান, "ভারত" ছবির সঙ্গে আর থাকছেন না প্রিয়াঙ্কা।কারণ,তার জীবনে বিশেষ কিছু ঘটতে চলেছে। তার জন্য শুভ কামনা রইল "ভারত" এই ছবির পুরো টীমের পক্ষ থেকে এমনটি বলেছে নির্মাতা আলী আব্বাস জাফর।

আলী আব্বাসের টুইটের পরপরই ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রিয়াঙ্কা-নিকের বিয়া হতে চলেছে বলে বেশ কানাঘুষা শুরু হয়েছে।এই টুইট কি তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ সুখের জীবনের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন? এমন প্রশ্ন সবার মুখে।

অন্যদিকে পপ সংগীতের তারকা নিক জনাসের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার প্রেমের খবর আগেই রাষ্ট্র হয়েছে।তাদের এই সম্পর্ক কবে বিয়েতে গড়াচ্ছে , তা নিয়েই এখন যত জল্পনাকল্পনা।এখন শোনা যাচ্ছে , আগামী ২৯ নভেম্বর প্রিয়াঙ্কা-নিকের বিয়ে হবার সম্ভাবনা রয়েছে।সম্প্রতি মুম্বাইয়ে মিস চোপড়ার পরিবারের সাথে নিক জনাস দেখা করেন।তারপর থেকেই জনপ্রিয় এই দুই জুটির বিয়ে নিয়ে নানা মত জনমাধ্যম ও জনমুখে রটতে শুরু করেছে।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া  ও নিক  জনাস 


অন্যদিকে 'ভারত' সালমান খানের বিপরীতে প্রিয়াঙ্কার স্থানে কাকে নেয়া হবে নায়িকা হিসেবে তা এখনো জানা যায়নি।এটা মূলত একটা বিগ বাজেটের ছবি হতে চলেছে।শুনা যায় , এই চবির জন্য নায়িকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ১৪ কোটি রুপি পারিশ্রমিক চেয়েছিলেন।বলিউডে এমন পারিশ্রমিক চোখ কপালে উঠার মত।
Share:

ইসলামে ছেলেদের ক্ষেত্রে স্ত্রী নির্বাচন আর মেয়েদের ক্ষেত্রে স্বামী নির্বাচন বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ


আজকে তেমনি কিছু কথা ইনলামিক রেফারেঞ্চ সহ বলার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্‌। 

মনে রাখবেন!একজন স্ত্রী মানে আপনার জীবন সঙ্গিনী , আপনার ঘরের রানী , আপনার হৃদয়ের প্রশান্তিদানকারিণী, সন্তানের জননী ও পরকালের কাজের উৎসাহ দানকারিণী। তাই স্ত্রী হিসেবে কাকে মনোনীত করছেন,তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি বিষয়।এখন আপনি যদি পুণ্যবতী দ্বীনদার স্ত্রী নির্বাচন করতে ভুল করেন তাহলে আপনি পারিবারিক জীবনে দুঃখ ও হতাশার মধ্যে পরে যাবেন।যা জীবনকে খুবই মারাক্তক ভাবে প্রভাবিত করে। তাই স্ত্রী নির্বাচনে যেমন নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করা আপনার জন্য ফিতনার কারণ হতে পারে তা জেনে নেয়া এবং  এর মর্ম  উপলদ্ধি করা আপনার জন্য আবশ্যক। 


যেমন নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করা করার আগে ২য় বার চিন্তা করে দেখা উচিত ,
১। পর্দাহীন নারী (মাহরাম , গাইর-মাহরামের ধারণা নেই এমন)
২। ঝগড়াটে 
৩। গীবতকারিণী 
৪। চোগলখোরিনি 
৫। ছবি তোলা , মূর্তি ভাস্কর্য ইত্যাদির প্রতি আকৃষ্ট নারী
৬। হিংসুটে নারী
৭। অভিশাপকারিণী
৮। প্রেম,অবাধবিচরণকারিণী অর্থাৎ  ব্যভিচারিণী
৯। নগ্ন-অর্ধনগ্ন পোশাক পরিহিতা
১০। সালাত পরিত্যাগকারি
১১। অতিরিক্ত বিলাসিনী
১২। বাধ্যযন্ত্র ও গানবাজনা শুনতে অভ্যস্ত নারী
১৩। অতিআরাম প্রিয় ও ঘুমকাতর নারী। 

পরিশেষে ভাইদের বলতে চাই ভাল মানুষের সাথে ভাল মানুষের মিল হয়। তাই ভাল স্ত্রী পেতে চাইলে আপনাকেও ভাল হওয়া অবশ্যই জরুরী।যেমন পবিত্র কোরআনের সূরা আন-নূর এর ২৬ নং আয়াতে উল্লেখ করে মহান আল্লাহ্‌  বলেন...

ٱلْخَبِيثَٰتُ لِلْخَبِيثِينَ وَٱلْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَٰتِ وَٱلطَّيِّبَٰتُ لِلطَّيِّبِينَ وَٱلطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَٰتِ أُو۟لَٰٓئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ

উচ্চারণঃ আলখাবীছা-তুলিলখাবীছীনা ওয়াল খাবীছূনা লিলখাবীছা-তি ওয়াততাইয়িবা-তু লিততাইয়িবীনা ওয়াততাইয়িবূনা লিততাইয়িবা-ত উলাইকা মুবাররাঊনা মিম্মাইয়াকূলূনা লাহুম মাগরিফাতুওঁ ওয়ারিঝকুন কারীম।

অর্থঃ দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। 

তাই ভাল স্ত্রী পেতে হলে আপনাকেও ভাল হওয়ার বিকল্প কিছু নাই।তার জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে দোয়া করা জরুরী। 
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَٱجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

উচ্চারণঃ রাব্বানা-হাবলানা-মিন আঝওয়া-জিনা-ওয়া যুররিইইয়া-তিনা কুররাতা আ‘ইউনিওঁ ওয়াজ‘আলনা-লিলমুত্তাকীনা ইমা-মা-।

অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। 

আলহামদুলিল্লাহ্‌।
Share:

আল-কোরআনের আলোকে ধান চাষের নতুন পদ্ধতি আবিস্কার ।


এমনি এক চাঞ্চল্যকর পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা সম্পূর্ণ পবিত্র আল-কোরআনের আলোকে কিভাবে ধান চাষ করলে সহজে লাভবান হওয়া যায়।
মুহাম্মাদ মমিনুল ইসলাম। প্রভাষক,এক্সিম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের জমি যেমন উর্বর এদেশের মানুষের মনও তেমন উর্বর। অর্থাৎ ধর্মের জন্য নরম।সুতরাং ইসলাম ধর্মের আলোকে সোনার বাংলার কৃষকদেরকে অধিকতর নরম করে ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করার সম্ভাবনা অনেক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাস্তবে হাতে কলমে বিষয়গুলো কৃষকদের দেখিয়ে ও শিখিয়ে দেয়ার অভাব । 
আল-কোরআনের ধান চাষ বিষয়ে আমি গবেষণা করে আসছি ২০১৫ সাল থেকে।যদিও ধারণাটি পেয়েছিলাম ২০১৩ সালের শেষের দিকে কোন এক বিকেল বেলা। 'সুইডিস ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সাইন্স' - এর লাইব্রেরীতে । পড়াশুনা ভাল না লাগলে কোরআন তিলাওয়াত করতাম।আইফনে একটি আপসের সাহায্যে হঠাৎ করে মহা গ্রন্থ আল-কোরআনের সূরা বাকারার ২৬১ নং আয়াত এবং সূরা ইউসুফের  ৪৭ নং আয়াত দুটিতে চোখ আটকে গেলো।উক্ত দুটি আয়াত আমাকে ধান চাষের ক্ষেত্রে ভাবিয়ে তুলছিল বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মেইল দূরে সুইডেনের উপসালা শহরে। 
উল্লেখ্য, সুইডেনে ধান চাষ হয়না বিধায় সেখানে এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ ছিল না। সেখানে পড়াশুনা শেষ করে  ২,৫০,০০০/- টাকা বেতনের চাকরী ছেড়ে দিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে চলে আসলাম দেশে।
সবাই আমাকে বোকা বলছিল।কারণ ইউরোপের নাগরিকত্ব আর চাকচিক্যময় জীবন ছেড়ে আশাটাকে কেউ ভালোভাবে নেয়নি।তবে আমি বুঝেছিলাম আল্লাহ্‌ আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন এবং আমি আমার মেধাকে দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারব।
কৃষিতে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ । 

দেশে এসে জমি থেকে ধানের শীষ সংগ্রহ করে শীষসহ রেখে দিলাম সূরা ইউসুফের ৪৭ নং আয়াত অনুসারে।পরের বছর নিজের রেখে দেয়া শীষকে বীজ হিসেবে ব্যাবহার করা হল। যেখানে বীজ গজানোর হার ছিল ৯৫% এর অধিক। ভ্রূণগুলো এতো মোটা ও শক্ত ছিল যে অন্যান্য কৃষকদের বীজগুলো চোখেই ধরছিল না।নিজের বীজ দিয়ে সূরা বাকারার ২১৬ নং আয়াতের আলোকে বারি-২৮ এর চারা একটি করে রোপণ করা হয়েছিল।যদিও আমাদের কৃষকগণ হাইব্রিডের ক্ষেত্রে ১-২ টি করে চারা রোপণ করে।এতে চারার অপচয় হয় বহুগুণ।
আমার জমিতে  সরবচ্চ একটি চারা বীজ থেকে ৩৭টি চারা উৎপাদিত হয় এবং গড়ে ১৫-২২টি করে চারা জন্মায়। যেখানে সরবচ্চ শীষের দীর্ঘ ১২ ইঞ্চি হয়েছিল , আলহামদুলিল্লাহ্‌।সাংবাদিকগন একটি শীষের ধান মেপে হিসাব করে শতাংশে প্রায় এক মনের হিসাব পান।এ বিষয়টি সংবাদপত্রে ও টিভি চ্যানেল গুলোতে প্রচারিত হলেও আল-কোরআনের আলোকে ধান চাষের বিষয়টি সবাই এড়িয়ে যায় কাকতালীয়ভাবে।
চলতি বছর চলনবিলে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আমার তত্ত্বাবধানে ২৬ বিঘা জমিতে একটি করে চারা রোপণ পদ্ধতি পরীক্ষা করা হয়।১৫ই জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে বারি-২৯ এর চারা রোপণ করা হয় এবং ১৮ই মে ধান কাটা হয়।যেখানে প্রতি শতাংশে ৩৯ কেজি ৫০০ গ্রাম ধান উৎপাদিত হয়।অর্থাৎ শতাংশে প্রায় ১ মণ।এবার একটি চারা থেকে ধান গাছ উৎপাদিত হয়েছে সরবচ্চ ৪৩ টি এবং ৪২ টি লম্বা শীষ জন্মেছে।
ধান গাছের গোড়াগুলো  এতই সবল ছিল যে বাতাসে হেলে ধানের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি যা অন্যান্য জমিতে হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে কৃষকের বীজের খরচ বহুগুণে কমেছে যা প্রায় ৬-৮ গুণ। এবং সার ব্যাবহার করতে হয়েছে যে কোন বছরের তুলনায় কম।অন্যদিকে বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহের খরচও কমে গেছে ব্যাপকভাবে। যে কৃষক আল-কোরআনের আলোকে একটি চারা রোপণ পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন,তিনি তার কৃষি জীবনে সবচেয়ে বেশী ফলন পেয়েছেন এবছর।অতএব এটাকে একটি সফল ঘটনা বা " সাকসেস স্টোরি" বলা যেতে পারে।
কিন্তু শুরুটা সন্তসজনক ছিলনা।২৬ বিঘা জমিতে একটি করে দেশী ধানের চারা রোপণকে অন্যান্য কৃষকগণ তামাসা হিসেবে নিয়েছিল।এক পর্যায়ে যে কৃষক একটি চারা পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন,তিনি ও তার পরিবারকে কাঁদতে হয়েছিল এই ভেবে যে , এবার মান-সন্মান ও ফসল সবই গেলো।একইভাবে ২০১৫-১৬ আমাকে আমার গ্রামবাসী পাগল বলেছিল এটা মনে করে যেবিদেশ থেকে পড়াশুনা করে এসে আমি পাগল হয়ে গেছি। শেষ হাসি আমরা হেসেছিলাম যখন ফলন ভাল হয়েছিল।

একটি করে চারা রোপণ পদ্ধতির মুল সমস্যা হল আস্থার সংকট।যেহেতু বিষয়টি একাধিক ভাবে জমিতে পরীক্ষিত ও প্রমাণিত এখনই একটি চারা পদ্ধতির প্রয়োগ সম্ভাবনাকে প্রান্তিক পর্যায়ে কাজে লাগানোর।কারণ একটি চারা রোপণ পদ্ধতিতে খরচ ও শ্রম কম কিন্তু উৎপাদন বেশী।

তাই বলছি কৃষক ভাইকদেরকে জানাতে নিউজটি সংকলনটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।সব শেষে , অপার সম্ভাবনাময়য় বাংলাদেশকে কৃষিতে ধান চাষে কোরআনিক পদ্ধতি একটি চারা রোপণ পদ্ধতি দেশের মাটি পেরিয়ে সারা বিশ্বে প্রয়োগ হবে এবং মহান আল্লাহর কালিমা জমিনে প্রতিষ্ঠিত হবে এটাই আমাদের একান্ত কাম্য।

                                                                                                                                                                      সঙ্কলিত।

Share:

গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের যা যা করনীয়।

একটি শিশু এসে একজন নারীর জীবনকে ধন্য করে তোলে। একজন নারী এক জীবন থেকে নতুন জীবনে পদার্পণ করে মাতৃস্নেহ নিয়ে।সন্তান জন্ম দিলে একজন  জন্মদাত্রী হওয়া যায়। তবে প্রকৃত মা হতে হলে সন্তানের সঠিক  প্রতিপালন গুরুত্বপূর্ণ। তাই গর্ভবতী অবস্থায় একজন মায়ের ইসলামিক দৃষ্টিতে কিছু কাজ ও শরিয়াত সম্মত কিছু দিক নির্দেশনা যা মেনে চললে সন্তানের ভবিষ্যৎ সুন্দর ও  সুখময় করে তলেন মহান আল্লাহ।

মায়ের গর্ভে শিশুর শিক্ষা পর্ব ঃ
আলহামদুলিল্লাহ্‌! প্রত্যেক মায়ের গর্ভে শিশু চল্লিশ দিন পর্যন্ত বীর্য  আকারে অবস্থান করে। অতঃপর পরবর্তী চল্লিশ দিন জমাট রক্তে পরিনত হয়।এরপর তা আরো চল্লিশ দিনের মধ্যে মাংসের টুকরায় পরিণত হয়।অতঃপর আল্লাহ্‌ একজন ফেরেশতাকে প্রেরণ করেন যাকে মানব শিশুটির ব্যাপারে চারটি বিষয় অর্থাৎ রিজিক , আয়ুকাল , ভাগ্যের ভাল  ও মন্দ সম্পর্কে লিখতে বলা হয়। এরপর  উক্ত মানব ভ্রূণের মধ্যে আত্মা (জীবন) দিয়ে দেয়া হয়। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম) ।
মেডিক্যাল সাইন্স বলে গর্ভবতী হওয়ার পর প্রথম মাসেই শিশুর হৃদপিণ্ড তৈরি হয় এবং গর্ভধারণের দেড় মাসের মধ্যেই শিশুর হৃদপিণ্ড কাজ করতে শুরু করে। পরবর্তী দু মাসের ভেতর হাত-পা এবং অন্যান্য অঙ্গসমূহ তৈরি হয়ে যায়।তিন মাস পর থেকে সে ধীরে ধীরে বড়ো হতে থাকে। পঞ্চম মাসে সে শুনতে পায়।তাই একজন গর্ভবতী মায়ের উচিত তৃতীয় মাস থেকে একটু জোরে জোরে কোরআন মাজিদ তিলায়ত করা ও হাদিস পড়া।পঞ্চম মাস থেকে পেটের সন্তানের সাথে কথা বলা যেতে পারে।ভালো ভালো কথা বলা অবশ্যয় বাঞ্ছনীয়।যদি প্রথন সন্তান হয় তাহলে সন্তান নড়াচড়া করার জন্য বিশ সপ্তাহ সময় নিতে পারে অর্থাৎ টের পাওয়া যায় ।তবে প্রথম সন্তান না হলে অর্থাৎ দ্বিতীয় বা তৃতীয় হলে ষোলো বা আঠারো সপ্তাহ সময় এর মধ্যে সন্তান নড়াচড়া টের পাওয়া যেতে পারে।
এসময় গর্ভে সন্তান নাভীর মাধ্যমে খাদ্যগ্রহণ করে তিল তিল করে বড় হতে থাকে।তাই মায়ের চরিত্রের  যথেষ্ট প্রভাব সন্তানের উপর পড়ে।কোন মা যদি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত(নামাজ) আদায় করা উচিত।
এসময় টিভির সামনে বসে না থেকে  অশ্লীল গান , নাচ , সিরিয়াল , নাটক , সিনেমা  ইত্যাদি দেখা থেকে বিরত থাকা খুবই জরুরী ।

বরং এসময় সন্তানের জন্য বেশী বেশী দোয়া করা খবই গুরুত্বপূর্ণ।যেমন পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে। যখন হযরত ইমরান (আঃ) এর স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন তখন তিনি এই দোয়াটি পাঠ করেছিলেন।

إِذْ قَالَتِ ٱمْرَأَتُ عِمْرَٰنَ رَبِّ إِنِّى نَذَرْتُ لَكَ مَا فِى بَطْنِى مُحَرَّرًا فَتَقَبَّلْ مِنِّىٓ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ

উচ্চারণঃ ইযকা-লাতিম রাআতু‘ইমরা-না রাব্বি ইন্নী নাযারতুলাকা মা-ফী বাতনী মুহাররারান ফাতাকাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আনতাছ ছামী‘উল ‘আলীম।(সূরা আলে ইমরান । আয়াতঃ ৩৫)

অর্থঃ এমরানের স্ত্রী যখন বললো-হে আমার পালনকর্তা! আমার গর্ভে যা রয়েছে আমি তাকে তোমার নামে উৎসর্গ করলাম সবার কাছ থেকে মুক্ত রেখে। আমার পক্ষ থেকে তুমি তাকে কবুল করে নাও, নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞাত।


এর পরে আরো দোয়া যেমন নিচে উল্লেখিত আয়াত পাঠ করতে পারেন। 

رَبِّ هَبْ لِى مِن لَّدُنكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ ٱلدُّعَآءِ

উচ্চারণঃ রাব্বি হাবলী মিল্লাদুনকা যুররিইইয়াতান তাইয়িবাতান ইন্নাকা ছামী‘উদ্দু‘আই।(সূরা আলে ইমরান । আয়াতঃ- ৩ঃ ৩৮)
অর্থঃ হে, আমার পালনকর্তা! তোমার নিকট থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান কর-নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী। 


رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَٱجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

উচ্চারণঃরাব্বানা-হাবলানা-মিন আঝওয়া-জিনা-ওয়া যুররিইইয়া-তিনা কুররাতা আ‘ইউনিওঁ ওয়াজ‘আলনা-লিলমুত্তাকীনা ইমা-মা-।

অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। 

সন্তান জন্মের আগের নৈতিক দায়িত্ব ঃ

১। মা-বাবা উভয়ে উত্তম ও ভালো কাজের নিয়াত করা।
২। মা-বাবা উভয়ে হালাল উপার্জন করা।
৩। মা-বাবা উভয়ে হালাল খাবার খাওয়া ।
৪। ওয়াক্ত মত দৈনিক পাঁচ সালাত আদায় করা।
৫। সম্ভব হলে মাঝে মাঝে তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করা।
৬। সালাতের পর আল্লাহর কাছে একা একা হাত তুলে দোয়া করা।
৭। দুজনেই খুব বেশী বেশী ভালো কাজ করা। 
৮। প্রতিদিন আল-কোরআন অর্থসহ তিলাওয়াত করতে চেষ্টা করা।
৯। নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত করা।
১০। ইসলামিক বই পড়া , মানুষের সাথে ভাল আচরণ করা। 
১১। গরীবের মাঝে দান-সদকা করা।
১২। গীবত পরনিন্দা একেবারেই না করা, অহংকার না করা, খারাপ কাজ ও খারাপ কথা না বলা ।
১৩। টিভি বা ইন্টারনেটে অশ্লীল কোন কিছু না দেখা বা শোনা।


  
সন্তান জন্মের আগের স্বাস্থ্যগত দায়িত্ব ঃ

১। ডাক্তার দ্বারা নিয়মিত চেকআপ করানো।
২। গর্ভবতীর উপর কোন প্রকার মানসিক বা দৈহিক চাপ সৃষ্টি না করা।
৩। হাসিখুশি থাকা, পরিষ্কার পরিছন্ন থাকা, ঠিকমত খানা পিনা করা, পরিমান মত পানি পান করা ,প্রতিদিন গোসল করা  ও যাবতীয় বিষয়ে যত্নবান হওয়া খুবই জরুরী একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য। 


সন্তান জন্মের পর দায়িত্ব  ঃ

১। সন্তানের সুন্দর ইসলামিক নাম রাখা।।
২। সন্তান জন্মের সপ্তম দিয়ে আকিকা করা। 
৩। মহান আল্লাহর নাম শুনানো। 
৪। মহানবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর দেখানো পথ অনুসারে সন্তানকে লালনপালন করে গড়ে তোলা এবং
৫। সন্তানের সকল প্রকার বালা-মসিবত ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।

Share:

মাকে বাঁচাতে ফুটপাতে দুই শিশুর আপ্রাণ চেষ্টা।

মাকে বাঁচাতে ফুটপাতে দুই শিশুর আপ্রাণ চেষ্টা।
এমনি ভিডিও ফুটেজ যা জর্জরিত করেছে লাখো হৃদয়বান মানুষের।ফুটপাতে জীবনযাপন করেন এমন এক মা ও ছোট্ট দুই বাচ্চা।এখন যাদের স্কুলে যাবার কথা। অন্য শিশুদের মতো ভালো পরিবেশে বাবা-মায়ের আদরে বড় হওয়ার কথা। সেই শিশুরা তাদের মায়ের সঙ্গে দিন-রাত কাটাচ্ছে ফুটপাত বা কোনও পার্কে। মা সারাদিন এখানে সেখানে ছুটে শ্রম দিয়ে অনেক কষ্ট করে দুমুঠো খাবার নিয়ে ঘরে ফিরলে তা ভাগ যোগ করে খেয়ে তৃপ্ত হয়।


এই মা আজ অসুস্থ বিছানা( রাস্তার ফুতপাত ) থেকে উঠে দাড়াতে পারেনা।এমন অবস্থায় শিশু দুটি মায়ের মাথায় পানি ঢেলে দিচ্ছে।মা যেন সুস্থ হয় সেই আশায়।তা ছাড়াতো কোন হসপিটালে যাবার ক্ষমতা নাই তার। এই মানুষ গুলোর জন্য কি আমাদের কিছুই করার নাই? আপনি ভাবছেন আছে, এই মহুরতে আমিও জানি আছে।কিন্তু আসলে এর সমাধান কি? এর মূল্যবান কিছু তথ্য নিয়ে আমাদের পরবর্তী কোন প্রতিবেদনে লিখবো ইনশাআল্লাহ্‌।


Share:

Hello

add code

জেনে নিন আমাদের সমাজের ২৪৪ টি কুসংস্কার ।

১) বাচ্চাদের দাঁত পড়লে ইঁদুরের গর্তে দাঁত ফেললে সুন্দর দাত উঠে। ২) খাওয়ার সময় সালাম দেয়া-নেয়া যাবে না। ৩) কাউকে ...

Categories

Add Code