Date:

ছাত্রছাত্রীরা আমাদের শিখিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলো।

এতো বড় মন্ত্রীসভা দিয়ে কী উপকার হচ্ছে? কাদেরকে মন্ত্রী বানানো হয়েছে? কাদেরকে নিয়ে দেশ চালানো হচ্ছে? প্রধানমন্ত্রীর চারপাশে এরা কারা? কাদের উপর আমাদের দেখভালের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে? যারা জনগণের ক্ষতি ছাড়া কিছুই করতে পারে না, যারা নিজ থেকে একটা ভাল সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, যারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত তাদের কেন রাখা হয়েছে মন্ত্রীসভায়? কেন এদের পেছনে আমাদের ট্যাক্সের টাকা খরচ করা হচ্ছে? নাকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  সরকার তারা সবাই এক?
অসুস্থ মহিলাকে রাস্তা পার করে দিচ্ছে।ছবি কেইজবুক
মন্ত্রীসভায় মন্ত্রীর বদলে মানুষ সাদৃশ্য কিছু মানুষ আছে যাদের কাজ দিনমান অন্যায় কাজে লিপ্ত থাকা। কোন মন্ত্রীর মন্ত্রণালয় নিয়ে দেশবাসী সন্তুষ্ট? কোন মন্ত্রণালয় কি সঠিকভাবে চলছে? কোন সরকারী খাত লাভজনক? বিদ্যুৎ বলুন সড়কপথ, রেলপথ, নদীপথ কিম্বা আকাশপথ?এসবের জবাব দেবে কে?কেন তারা চুপ? যোগাযোগের সব পথই তো চলে গেছে দুর্নীতির উচ্চশিখরে। মন্ত্রী, এম পি ও দলের নেতাদের বাচ্চারা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছে, তাই তারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে না, বিদেশের নামকরা স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে বিদ্যার্জন করছে।কারণ, মন্ত্রীমশাইদের কল্যাণে শিক্ষার মানতো ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। উনারা জেনেশুনে নিজদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে পড়ানোর রিস্ক নেন না। শিক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা খাতে দুর্নীতির মহামারীতে আক্রান্ত। সরকারী বলেন বিরোধী বলেন সব দলের রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী ও এমপি ছোটেন বিদেশে চিকিৎসা নিতে, কারণ আপনারা জানেন দেশে চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবার বদলে রাজনীতিতে দক্ষ, তাদের হাতে চিকিৎসা করা আর চলন্ত গাড়ীর নীচে ঝাপ দেয়া একই।তাই তারা এদেশের শিক্ষা চিকিৎসা কোনটাই নেন না।কারণ,তারা জানে এদেশকে তারা ভালো রাখেনি।
ছাত্ররা রাস্তা পরিষ্কার করে দিচ্ছে।ছবি ফেইজবুক
আজকে আমরা ছাত্রছাত্রী , শিক্ষক সাধারণ মানুষ। আমরা আমজনতা গাড়ীর নীচে ঝাঁপ না দিলেও গাড়ী আমাদের গায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রতিদিন দু’চারজনকে সড়কে পিষে মারে, মরে আমাদেরই কারো ভাই, বোন বন্ধু কিন্তু তাদের কিছু হয় না। আপনাদের উপেক্ষা, উদাসীনতা, লোভে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই ঘরে বাইরে। অফিসে-স্কুলে। মসজিদ-মন্দিরে। ট্রেনে-বাসে-লঞ্চে-প্লেনে সাইকেলে-রিক্সায় এমনকি হেঁটেও আমরা নিরাপদ না। আপনারা বারবার নিরাপত্তার কথা বলেন। কোথায় নিরাপত্তা? কোথায় আইনের প্রয়োগ হচ্ছে দেখান। আপনাদের সব আইন গরীবের উপর, দুর্বলের উপর, দেশের মধ্যে দুই দেশ বানিয়ে ফেলেছেন, একদিকে গরীব, দুর্বল, খেটে খাওয়া মানুষ আর একদিকে আপনারা ক্ষমতাবান, মন্ত্রী-এমপি, দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক ও সম্পদশালী ব্যবসায়ীরা। এদের জন্য একধরনের সুযোগ সুবিধা, আমাদের জন্য কিছু নেই, কথায় কথায় নিপীড়ন করা ছাড়া।এমন স্বৈরাচারী শাসক , মন্ত্রী-এমপি দুর্নীতিবাজ লুটে-পুটে খাওয়ার ধান্দাবাজ মন্ত্রী পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।যা একমাত্র বাংলাদেশে এই কুৎসিত প্রাণীগুলোকে দেখা যায়। জনাব,আপনাকে দেখে খুব ভাল মনে হয় কিন্তু আপনার ভিতরটা যে এতো পচা বিশ্রী দুর্গন্ধ চড়াচ্ছে প্লিজ আপনার এই দুর্গন্ধ যুক্ত আত্মাটাকে পরিষ্কার করুণ।অ্যাট লিস্ট , উপরে একজন আছে তিনি সব দেখছেন বলে।
ন্যায়ের পক্ষে প্রতিবাদ মুখর শিক্ষার্থীর উপর পুলিশের নির্যাতন।ছবি ফেইজবুক
পাকিস্তানীদের থেকেও আপনারা খারাপ হয়ে গেছেন, ওরা পূর্ব পাকিস্তানের বাংলাভাষীদের অত্যাচার করত আর আপনারা নিজের দেশের জনগণ, যারা আপনাদের ভোট দেয়, যারা আপনাদের পাশে থেকেছে তাদের উপর অত্যাচার করেন। ১৯৫২ তে যেমন ছাত্র শিক্ষকের উপর গুলি চলেছিল আজ আপনারা নিজের শিশু কিশোর আন্দোলনের উপর দাঙ্গাপুলিশ নামিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে দিচ্ছেন। আপনারা নিষ্ঠুর অমানবিক বিবেকহীন মানুষ। আপনারা ইউনাইটেড নেশনের শিশু সনদে স্বাক্ষরকারী প্রথমদিকের দেশ ভাবতেও লজ্জা লাগে। আপনারা কথায় ও কাজে এক না।আচ্ছা , আপনাদের কি লজ্জা লাগে না ?
ছাত্রটি  শিখিয়ে দিলো  কিভাবে গাড়ি থামিয়ে গাড়ির লাইসেন্স দেখতে হয়।ছবি ফেইজবুক
এই দুধের শিশুরাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কি করে প্রতিবাদ করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ছাত্র-ছাত্রীরা যেখানে আন্দোলন থামালো পুলিশি দমন পীড়নের ভয়ে। সেখানে স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চারা কি করে আন্দোলন করতে হয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হয় চোখে আঙুল দিয়ে শেখাচ্ছে আমাদের। আমি এই কদিনে অনেক শিখেছি।আপনি শিখেন না কেন?লজ্জা লাগে? আপনি তো মন্ত্রীর চেয়ারে বসে কিভাবে মন্ত্রিত্ব করতে হয় তা জানেননা।কিভাবে দেশের প্রশাসন চালাতে হয় সেটাও জানেন না।আপনার তো সিট ছেড়ে দিয়ে অন্ধকার ঘোরে বসে থাকা উচিৎ। আমরা তো ঘরের কোণে কেন্নোর জীবন কাটাচ্ছি। কোন প্রতিবাদে নেই, ভয়ে ভয়ে চলি।ভাবি, যদি আমার ক্ষতি করে। আর এই শিশুগুলি তারা নিজেদের বন্ধুদের প্রতি ঘটে যাওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদে, সড়ক পথে প্রতিদিন চলমান অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। দাঁড়িয়েছে বললে অন্যায় হবে, সত্যিটা হল আপনারা আজ আপনাদের মুখোমুখি এই শিশুগুলিকে দাড় করিয়েছেন।কতটা ব্যর্থ আপনারা একবার ভাবেন। আপনারা এক ঘেরাটোপে বসবাস করছেন, চারধারে থাকা মানুষগুলি যা বলে তাই করেন, তাই শোনেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রোগীর অ্যাম্বুলেন্স পার করে দিচ্ছে।ছবি ফেইজবুক 
দেখুন কিভাবে জনসেবা করতে হয়।
বঙ্গবন্ধুর শেখানোর “অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করবা” অমর বাণী বুকে নিয়ে তারা পথে নেমেছে। ওরা সূর্যশিশু।ওরা আগামীর কর্ণধার। ওরা যুগে যুগে ফিরে আসবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে নামবে পথে। আমরা ভিতু হলেও আমাদের শিশুরা কিন্তু ভিতু না। আমরা অন্যায় দেখে মুখ লুকালেও আমাদের শিশুরা বুক চিতিয়ে দাড়িয়ে প্রতিবাদ করছে। আপনাদের দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে কাজ করতে হয়।
সিস্টেমহীন একটা দেশে পরিণত হয়েছে আমাদের দেশ, আপনারা রাজনীতিবিদরা কেউ দেশের মানুষের কথা ভাবেন না। খালি ব্যবসা করেন, চৌদ্দপুরুষ বসে খাবারমত সম্পদ আপনার ৮০ ভাগ মন্ত্রী-এমপি, দলের নেতাকর্মীর। কি করে হয় বলেন?
কিভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয় দেখুন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার চারপাশে থাকা তোষামোদকারী ও সুবিধাবাদীরা আপনার সব পরিশ্রম ব্যর্থ করে আপনাকে শিশু-কিশোর ও তরুণ সমাজের সামনে দাঁড় করাচ্ছে। কেন দাঁড়ালো ওরা? আপনি কেন ভাবেন না ? 
সড়কপথে চলাচলকৃত ভারী যানবাহনের জন্য কি আইন করেছেন? কি কঠোর আইন প্রণয়ন করেছেন? ফিটনেসবিহীন গাড়ী চালালে কি শাস্তির ও কত জরিমানা ধার্য করেছেন? গাড়ী চাপা দিয়ে মানুষ মারলে কত কঠোর শাস্তির বিধান করেছেন? এ পর্যন্ত অনেক খ্যাত-অখ্যাত ব্যক্তি গাড়ী চাপায় ও ড্রাইভারের দোষে মারা গেছে। তার কি বিচার করেছেন কয়টা? ক্ষতি পূরণ করেছেন কয়জনের।
বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দুর্নীতিবাজদের এখনই বিদায় করেন। সবার আগে শিশুকিশোরদের দাবী অনুযায়ী নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের অপসারণ করুন। এদের টাকার খেলা বন্ধ করুন, আপনার ৮০ ভাগ মন্ত্রী এমপি টাকার খেলায় ব্যস্ত, ক্ষমতার খেলা ব্যস্ত।
আপনারা কথায় কথায় উন্নত বিশ্বের উদাহরণ দিয়ে থাকেন। বিদেশে বন্যা হয়, পথে মানুষ মারে, দুর্নীতি হয়, খুন হয়, রাহাজানি হয় কিন্তু উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্রনায়ক বা প্রশাসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির মত ভুল বা অন্যায়ের জন্য পদত্যাগের উদাহরণটা কেন প্রয়োগ করেন না। রাষ্ট্রপ্রধানরা গনপরিবহনে চলাচল করে সেটা শেখেন না। আপনারা নিজেদের স্বার্থ ও ক্ষমতা ছাড়া কিছুই বোঝেন না। এটাও বোঝেন না যে জনগণের জন্য ছোট খাট কিছু করলে তার প্রতিদানে জনগণের আন্তরিক ভালবাসাই পাবেন। ভোট দুর্নীতি করা লাগবে না।
জানি কিছুই হবে না তবু লিখে যাই, রাজপথে নামার সাহস নাই বলেই হয়তে কাগজের সাদা বুকে লিখে যাই কালো কালিতে, যদি কখনো ভুল করে হলেও আপনাদের চোখে পড়ে ।অন্যায়ের বিরুদ্ধে আর ন্যায়ের পক্ষে তাদের এই আন্দোলন যেন আপনাদের চোখে পড়ে।
Share:

ADD CODE

Hello

No comments:

Post a Comment

add code

জেনে নিন আমাদের সমাজের ২৪৪ টি কুসংস্কার ।

১) বাচ্চাদের দাঁত পড়লে ইঁদুরের গর্তে দাঁত ফেললে সুন্দর দাত উঠে। ২) খাওয়ার সময় সালাম দেয়া-নেয়া যাবে না। ৩) কাউকে ...

Categories

Add Code